Help Post

কোষ্ঠকাঠিন্যের মহৌষধ সোনাপাতা

Sona Pata Powder (সোনাপাতা গুঁড়া) 250gm

রাসুল সাঃ বলেন, এমন কোনো প্রতিষেধক যদি থাকতো, যা মৃত্যুকে প্রতিরোধ করতে পারতো, তাহলে তা হতো সিনা/ সোনা পাতা। (সুনান ইবনে মাজাহ, হাদিস নং-৩৪৬১)

এই কথা থেকেই সোনাপাতার কার্যকারিতা ও গুরুত্ব কতটা ব্যাপক তা ধারণা পাওয়া যায়। আধুনিক বিজ্ঞানেও সোনাপাতা বিপুল রোগ নিরাময়ে উপকারী বলে আখ্যায়িত করা হয়েছে। অনেকে ধারণা করে থাকেন যে, এক হাজারেরও অধিক রোগ উপশম করার ক্ষমতা রয়েছে সোনাপাতার। তাই ধর্মীয় অনুপ্রেরণা থেকে হোক বা আয়ুর্বেদ শাস্ত্রের বহুবর্ষের ব্যবহার বিধি থেকে হোক, সুস্থ ও সুন্দর জীবন-যাপনে সোনাপাতার কোন বিকল্প নেই।

সোনাপাতার পরিচিতি

সোনাপাতা দেখতে কাঁচা অবস্থায় অনেকটা হলুদাভ সবুজ এবং শুকনো অবস্থায় অনেকটা হলুদাভ সোনালি বর্ণের হয়। এর মাথায় হলুদ রঙের ফুল ফোটে। ফুল অনেক সময় সাদা বা গোলাপি রঙেরও হয়ে থাকে। এর ফল অনেকটা শিমজাতীয় নলাকার বা চ্যাপ্টা হয়। ফলের ভিতরে আড়াআড়িভাবে বীজ থাকে।

সোমালিয়া, সুদান, সিন্দু প্রদেশ, পাঞ্জাব ও দক্ষিণ ভারতে বাণিজ্যিকভাবে সোনাপাতার চাষ হয়। বাংলাদেশসহ উপমহাদেশের আরও অনেক অঞ্চলে সোনাপাতা পাওয়া যায়। আরব দেশেও বিভিন্ন জঙ্গলে প্রচুর পরিমাণে সোনাপাতা জন্মে থাকে। সোনাপাতা গাছ মুলত উষ্ণমন্ডলীয়। ফলে এসকল দেশ সমূহে বেশী জন্মে।

সোনাপাতার পুষ্টি গুণাগুণ

সোনাপাতা এক প্রকার বীরৎ জাতীয় উদ্ভিদ। এর পাতা দেখতে অনেকটা মেহেদি পাতার মত হলেও, গুণাগুণ সম্পূর্ণ ভিন্ন। এতে রয়েছে ১.৫-৩% হাইড্রোজায়ানথ্রাসিন গ্লাইকোসাইড, প্রধানত সেনোসাইড এ এবং বি যা রেইন-হায়ানথ্রোন এবং কম পরিমাণে সেনোসাইড সি এবং ডি যা রেইন-এলো-ইমোডিন-হেটেরোডায়ানথ্রোন, ন্যাপথলিন গ্লাইকোসাইড ফ্ল্যাভোনয়েড(কেম্পফেরল এবং আইসো-রামানিটিন এর ডেরিভেটিভ), ১০-১২% খনিজ উপাদান, ৭-১০% মিউসিলেজ(গ্যালাক্টোজ, এরাবিনোজ, রামনোজ এবং গ্যালাকটিউরোনিক এসিড), প্রায় ৮% পলিঅল (পিনিটল); সুগার(গ্লুকোজ, ফ্রুক্টোজ এবং সুক্রোজ) এবং রেজিন। এসকল খনিজ, লবণ, ক্যালসিয়াম, ফ্ল্যাভোনয়েড নামক এন্টি-অক্সিডেন্ট উপাদানগুলো সোনাপাতার ভেষজ গুণাগুণ বহন করে এবং মানুষের নানবিধ সমস্যা সমাধানে উপকারে আসে।

সোনাপাতার উপকারিতা

সোনাপাতার অনেক উপকারিতা রয়েছে। তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য কিছু উপকারিতা হল –

১। সোনাপাতা কোষ্ট-কাঠিন্য দূর করতে ব্যাপক উপকারে আসে। আয়ুর্বেদ শাস্ত্রে একে কোষ্ঠ্যকাঠিন্যের মহৌষধ বলা হয়ে থাকে।

২। সোনা পাতায় বিদ্যমান এনথ্রানয়েড রেচক হিসেবে কাজ করে এবং হজম প্রক্রিয়াকে সক্রিয় রাখে। এতে কোলনের সঞ্চালন উদ্দীপিত হয়। ফলে খুব অল্প সময়ে এবং খুব সহজেই মল দেহ থেকে বাইরে নিষ্কাষিত হয়।

৩। নিয়মিত সেবনে শরীরের ওজন ও ক্ষুধা কমে।

৪। উচ্চ রক্ত চাপ নিয়ন্ত্রণে সহায়তা করে।

৫। সোনাপাতা কৃমিনাশক হিসেবে কাজ করে।

৬। অর্শ রোগের প্রতিরোধক ও প্রতিষেধক হিসেবে কাজ করে।

৭। ত্বকের বিভিন্ন সমস্যার সমাধান করে।

কোষ্ঠকাঠিন্য দূরীকরণে সোনাপাতার তাৎপর্য

বিশ্ব হার্বাল গবেষণা ইন্সটিটিউট সোনাপাতাকে অত্যন্ত শক্তিশালী ভেষজ হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছে। সারা বিশ্বে কোষ্ঠকাঠিন্য নিরাময়ের জন্য সোনাপাতা গ্রহণের অনুমতি দেয়া হয়েছে। এমনকি বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (WHO) ক্ষণকালীন সংঘটিত কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করার জন্য সাময়িক চিকিৎসা হিসেবে সোনাপাতা ব্যবহারের অনুমতি দেয়। অধিকাংশ বিশেষজ্ঞের মতে, সোনা পাতা ভেষজ হিসেবে সরাসরি ব্যবহারের চাইতে গুঁড়া করে নিয়মিত খেলে শরীর ভেতর থেকে অধিক পরিষ্কার হয় ও এর কার্যকারিতা বৃদ্ধি পায়। এক কথায়, কোষ্ঠকাঠিন্য নিরাময়ে সোনাপাতা সর্বাধিক কার্যকর ভেষজ।

সোনাপাতা এন্টি-সেপটিক ও এন্টি আলসার হিসেবেও কাজ করে। এটি এন্হ্রাকুইনোন সাইটোটক্সিক এবং কোষ পুনরুদ্ধার-এ রিজেনারেশনে উদ্দীপনা জাগায়, ডিটক্সিফিকেশন এবং পরিষ্কারক হিসেবেও কাজ করে।

সোনা পাতা খাওয়ার নিয়ম

যেহেতু সোনাপাতা গুঁড়া অধিক কার্যকরী সেহেতু ন্যাচারালস সোনাপাতা গুঁড়া খাওয়াই উত্তম। সেক্ষেত্রে হাফ চা চামচ সোনাপাতা গুঁড়া এক কাপ গরম পানিতে মিশিয়ে ৫ মিনিট পর খেয়ে নিতে হবে। সোনাপাতা গুঁড়া চায়ের সাথেও খাওয়া যায়।

সতর্কতা

আমাশয়, পাতলা পায়খানা জনিত সমস্যা থাকলে বা কোন অন্ত্রের রোগ থাকলে (যেমন- অন্ত্রের প্রদাহ, আলসার, এপেনহিসাইটিস ইত্যাদি) সোনাপাতা খাওয়া যাবে না। এছাড়া গর্ভবতী বা স্তন্যদানকারী মা, বৃদ্ধ, শিশু ও দুর্বলদের জন্য সোনাপাতা খাওয়া নিষেধ।

সোনাপাতা খাওয়ার ৪-৫ ঘণ্টার মধ্যে বাথরুমের আশেপাশে থাকতে হবে এবং সপ্তাহে দুই দিন বা তিন দিনের বেশি সেবন করা উচিত না।

পরিশেষে

সোনাপাতা অত্যন্ত উপকারী একটি ভেষজ। নানা রোগ নিরাময়ের পাশাপাশি কোষ্ঠকাঠিন্য সমস্যা দূর করতে সোনাপাতা ব্যাপক উপকারে আসে। সোনাপাতা থেকে সঠিক উপকার পেতে বাজারের খোলা সোনাপাতা নয়, ভরসা রাখুন আমারবাজার্স  এর নাপাতায়। যা সরাসরি প্রকৃতি থেকে সংগ্রহ করে স্বাস্থ্যসম্মত উপায়ে প্রক্রিয়াজাত করে উন্নতমানের প্লাস্টিক বায়ুনিরোধক পাত্রে সংরক্ষণ করা হয়। এতে সোনাপাতার আসল গুণাগুণ অক্ষুণ্ণ থাকে এবং যথাযথ উপকার পাওয়া যায়।

#সুস্বাস্থ্য_মানেই_আমারবাজার্স ।

One thought on “কোষ্ঠকাঠিন্যের মহৌষধ সোনাপাতা

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *